মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১৮

অসুখী দাম্পত্য জীবনে কিভাবে সুখ ফিরিয়ে আনা যায়? অসুখী হতে না চাইলে

রাজীবের স্ত্রী নীতুকে আমরা যতটা দজ্জাল ভাবি, তিনি আসলে ততটা হূদয়হীনা নন। নীতু ভাবি নির্দয় হলে তরকারির বাটিটা রাজীবের দিকেই ছুড়ে মারতেন। তিনি সেটা করেননি। বাক্যবিশারদ রাজীবের সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটিতে সুবিধা করতে না পেরে তিনি দেয়ালের দিকে তরকারির বাটি ছুড়ে মেরেছিলেন। দোষ আসলে রাজীবের কপালের, নইলে তরকারির বাটিটা দেয়ালে বাউন্স খেয়ে রাজীবের কপালে এসে লাগবে কেন? আর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজীবই বা কেন গৃহত্যাগের মতো একটি চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে বসবেন।



আবার মারুফের বউটা মন্দ কিসে? রাতে দেরি করে বাড়ি ফিরল মারুফ। সহূদয়া আঁখি ভাবি কিছুই বললেন না। কেবল মারুফ যখন ঘরে ঢুকে বাথরুমে গেল, তখন তিনি বাইরে থেকে সিটকিনি আটকে দিলেন। বাকি রাত মারুফ কারারুদ্ধ থুড়ি বাথরুমরুদ্ধ হয়ে রইল। বাথরুমে বসেই মারুফ একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল, গৃহত্যাগ।

আর আমার বউ? কী আর বলব। অমন মেয়ে হয়ই না। হলেও বাঁচে না। লাখে একটা। ঘরে ঢুকব বলে কলবেল চাপলাম। মিতু দরজা খুলে বলল, কচুর লতি এনেছ?
তখনই ঝপ করে মনে পড়ল, বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় মিতু পই পই করে বলে দিয়েছিল কচুর লতি আর মুলাশাক কিনে নিয়ে যেতে। আমারই দোষ, ভুলে গিয়েছিলাম।
আমি জিবে কামড় দেওয়ার আগেই সে দরাম করে দরজা বন্ধ করে দিল।
আমি আবার কলবেল টিপলাম। কাজ হলো না দেখে দরজায় মৃদু করাঘাত করলাম। তাতেও কাঙ্ক্ষিত ফল না আসায় দরাম দরাম করে ঘা দিলাম। দরজা খুলল, তবে আমার বাসার না, পাশের বাসার। আওয়াজের চোটে পাশের ফ্ল্যাটের ভদ্রলোক বেরিয়ে এসেছেন। পরিস্থিতি জরিপ করে করুণ কণ্ঠে বললেন, মাঝে মাঝে এই রকম হয়। সিঁড়ির ল্যান্ডিংয়ে টুল পেতে দিচ্ছি। গ্যাঁট হয়ে বসে থাকুন। সংসারে টিকে থাকার প্রথম শর্ত হচ্ছে, ধৈর্য। বউরা মাঝেমধ্যে এমনটা করেই।
টুলে বসে মশার কামড় খেতে খেতে আমিও সিদ্ধান্ত নিলাম, গৃহত্যাগ। এ ছাড়া গত্যন্তর নেই।

২.
আমি, রাজীব ও মারুফ রেন্ট-এ-কারের সন্ধানে কারওয়ান বাজার এলাকায় ঘুরছি। একটা গাড়ি ভাড়া করে যেদিকে দুচোখ যায় চলে যাব। একটা রেন্ট-এ-কারের দোকান পেয়েও গেলাম। এসডি রেন্ট-এ-কার। খুব সস্তায় ভাড়া রফা হলো। এরপর গাড়ি দেখে কেমন যেন চেনা চেনা মনে হলো। একটু পর গাড়ির ড্রাইভার যখন এলেন, তখন আমাদের ভিরমি খাওয়ার দশা। এ যে আমাদের সিমু।
সিমু আমাদের ঘাড়ে হাত রেখে বলল, যে দিনকাল পড়ছে ভাই। এই মুদ্রাস্ফীতির যুগে শুধু একটি চাকরি করে চলে, বলেন? এ জন্য একটা সাইড বিজনেস খুলেছি। গাড়িটা ভাড়ায় খাটাচ্ছি। ছুটি থাকলে নিজেই ট্রিপ মারি। আসেন গাড়িতে ওঠেন।
গাড়িতে উঠে আমরা তিনজন শুধালাম, এসডি রেন্ট-এ-কার মানে কী?
সিমু স্টিয়ারিং ঘোরাতে ঘোরাতে বলল, এস মানে সিমু।
আমরা সমস্বরে বললাম, আর ডি তে...
সিমু কিছুই বলল না, মুচকি হাসল।

৩.
গাড়ি ছুটছে মহাসড়ক ধরে। আমরা তিন অভিমানী স্বামী গাড়িতে বসা। যত দূর চোখ যায়, চলে যাব।
রাজীব ধরা গলায় বলল, সিমু ভাই, গহিন কোনো খাদ দেখলে গাড়ি আলতো করে নামায়ে দিয়েন। এই যন্ত্রণা আর নিতে পারছি না।
মারুফ চোখ মুছল।
আমি গান ধরলাম, আমায় ডেকো না, ফেরানো যাবে না...।

৪.
শেষমেশ একটা অচেনা, গহিন এলাকায় গাড়ি ভিড়ল। সামনে নদী ছাড়া কিছু নেই।
নদীর সামনে এসে সিমু বলল, জিনস প্যান্ট পরে কি আর সন্ন্যাসী হওয়া যায়? জামাকাপড় কিছু আনছেন? ওর মধ্যে লুঙ্গি আছে?
নাঙ্গা গা, পরনে লুঙ্গি। নদীতে নামলাম। কালীগঙ্গা নদী। অসম্ভব চোরা স্রোত। আমাদের প্ল্যান, নদী পার হয়ে জঙ্গলে ঢুকে পড়ব। খরস্রোতা নদী সাঁতরে ওপারে যাওয়ার প্রাক্কালে প্রথমে আমার, তারপর মারুফ, সবশেষে সিমু এবং রাজীবের লুঙ্গি স্রোতে ভেসে গেল।
আমরা একবুক পানিতে অসহায় দাঁড়িয়ে রইলাম।
না পারি এপারে আসতে, না যেতে পারি ওপারে।
অকূল দরিয়ায় অসহায় চার যুবক।
এমন সময় রাজীব বললেন, বস আমার পাশ দিয়ে একটা ইলিশ সাঁতার কেটে চলে গেল। লজ্জায় ধরতে পারলাম না।




দাম্পত্য জীবনকে করে তুলুন আরো বেশী সুখময় ও
সুন্দর
শুধু ভালোবাসা দিয়েই একটি সম্পর্ককে সুখী ও সুন্দর
করা যায় না। তখন জীবন আরও জটিল হয়ে পড়ে। আজকাল
দম্পতিগুলোর মূল সমস্যাই হলো পারস্পরিক বোঝাপড়া।
আর একারণেই ভেঙে যাচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর সর্ম্পক।
তবে সুখী দম্পতিরা বৈবাহিক সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী করতে
সবসময়ই কিছু কাজ করে থাকেন। দাম্পত্য জীবনে
কিভাবে সুখী থাকা যায় তেমনই ৬ মূলমন্ত্র নিয়ে
আলোচনা করা হলো।
বিশ্বাস ও স্বচ্ছতা : বিশ্বাসই হলো সম্পর্কের মূল
ভিত্তি। এর মাধমেই সম্পর্কটা আরো মজবুত হয়। বিশ্বাস
তখনই আসে যখন সম্পর্কে একে অপরের প্রতি স্বচ্ছতার
সৃষ্টি হয়। যেখানে বিশ্বাস ও স্বচ্ছতা দুটোই থাকবে
সেখানে সম্পর্ক সফল ও দীর্ঘস্থায়ী হতে বাধ্য।
পরস্পরকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করা : দাম্পত্য জীবনের
আরেকটি মূলমন্ত্রই হলো একে অপরকে সম্মান ও শ্রদ্ধা
করা। একে অপরের মতামত ও ইচ্ছা অনিচ্ছার
বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া। এতে সম্পর্কে গভীরতা
আসে এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়।
ভুল বোঝাবোঝির অবসান : একসঙ্গে থাকতে গেলে
সামান্য কারণে ভুল বোঝাবোঝি হতেই পারে। অনেক
সময় তা সম্পর্ক ভাঙা পর্যন্তও গড়ায়। তাই সম্পর্ক
টিকিয়ে রাখতে চাইলে সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলে ভুল
বোঝাবুঝি দূর করুন। এতে একে অপরের সম্পর্কে শুধু
ভালো ধারণাই তৈরি হবে না, বরং সম্পর্কেও মধুরতা
আসবে।
সহনশীলতা ও সহানুভূতির মনোভাব : সম্পর্ককে
দীর্ঘস্থায়ী করতে দুপক্ষেরই সহনশীলতা ও সহানুভূতির
মনোভাবের প্রয়োজন রয়েছে। কারণ এই মনোভাবের
কারণেই দুজনের মধ্যে যে পারস্পরিক সমঝোতার সৃষ্টি
হয়, সেটিই দীর্ঘস্থায়ী সফল বৈবাহিক সম্পর্কের
মূলমন্ত্র।
শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক : বিয়ে মানেই কিন্তু
শুধু দুজনের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করা নয়; সম্পর্ক তৈরি হয়
দুটি পরিবারের মধ্যেও। সম্পর্কের গভীরতা, স্থায়িত্ব
অনেকাংশেই নির্ভর করে পরিবারের ওপর। স্বামী ও
স্ত্রীর একে অপরের পরিবারের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য
পালনের মাধ্যমেও প্রকাশ হয় একে অপরের প্রতি মায়া
মমতা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। আর দু’পক্ষের বন্ধন যতোটা
গাঢ় হবে সম্পর্ক ততোটাই সফল হবে।
সম্পর্কে মধুরতা ধরে রাখা : দাম্পত্য জীবনে
পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেকেই
সম্পর্কের মধুরতা হারিয়ে ফেলেন। এতে স্বামী স্ত্রীর
মধ্যে দূরত্বের সৃষ্টি হয়। সম্পর্ক সফল ও দীর্ঘস্থায়ী
করতে সম্পর্কে যে কোনো মূল্যে মধুরতা ধরে রাখা
জরুরি। এক্ষেত্রে মাঝমাঝে কোথাও বেড়াতে যেতে
পারেন, তাকে আগের মতোই ভালোবাসার কথা বলতে
পারেন, ছোটখাট বিষয়ে তার প্রশংসা করেও সম্পর্কে
মধুরতা ফিরিয়ে আনতে পারেন। তবেই সম্পর্ক সফল ও
দীর্ঘস্থায়ী হবে।


. নারীরা খারাপ ছেলেদের প্রতি একটু বেশিই আকৃষ্ট থাকেন। এই বিষয়টির সাথে বিজ্ঞানও একমত। নানা গবেষণায় দেখা দেয় নারীরা খারাপ পুরুষের প্রতি তীব্র আকর্ষণ অনুভব করেন। কিন্তু তিনি ভালো হয়ে যাবেন এই আশায় তাকে বিয়ে করার মতো ভুল কাজটি করতে যাবেন না একেবারেই। এইধরনের ছেলেরা স্বামী হিসেবে একেবারেই খারাপ হয়ে থাকেন।

২.অতিরিক্ত আত্মকেন্দ্রিক ধরনের পুরুষের সাথে খুব বেশিক্ষণ কথা বলাও সম্ভব হয়ে উঠে না। এই ধরনের পুরুষেরা নিজের প্রশংসায় নিজেই পঞ্চমুখ হয়ে থাকেন। নিজের রূপ-গুণ থেকে শুরু করে সবকিছুরই গুণগান সবসময় শুনতে থাকবেন এইধরনের পুরুষের মুখে। এবং তিনি স্বামী হিসেবেও নিজেকেই অনেক বেশি ভালো জাহির করতে থাকবেন যা অনেক সময়েই বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

৩. অতিরিক্ত মা ঘেঁষা ছেলেরা মানুষ হিসেবে ভালো হলেও স্বামী হিসেবে মোটেই সুবিধার নন যদি না তার ন্যায় অন্যায় জ্ঞান প্রবল থাকে। কারণ মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা, মমতা প্রদর্শন করতে গিয়ে সে অনেক সময়েই স্ত্রীর প্রতি কর্তব্য পালন করতে পারেন না। অন্যায় হতে দেখলেও মেনে নেন মাথা নিচু করে।

৪. আমি অনেক কিছু জানি, আমি তোমার থেকে বেশি জানি এই ধরনের ভাব ধরা পুরুষ থেকে একশ হাত দূরে থাকুন। কারণ এই ধরনের পুরুষেরা নিজেদের মতামতকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন, নিজেকে অনেক বেশি জ্ঞানী মনের করেন বিধায় স্ত্রীর মতামত নেয়ার প্রয়োজনও অনুভব করেন না। এমন পুরুষেরা স্বামী হিসেবে একেবারেই ভালো নয়।

৫. অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রনে রাখতে চাওয়া পুরুষের সাথে একেবারে মাটির মানুষের মতো নারীরাই ঘর করতে পারেন। কারণ প্রতিটি কাজে বাঁধা এবং নিজের আওতাধীন রাখতে চাওয়াই এইধরনের পুরুষের মূল লক্ষ্য যা আধুনিক এবং প্রগতিশীলা নারীরা একেবারেই সহ্য করতে পারেন না। সুতরাং সতর্ক থাকুন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

  10:57 How to make a Bootable USB Flash for Windows 10 Operating System | পেন ড্রাইভে উইন্ডোজ লোড ✔️ 5 views 3 days ago 100% ...